কম্পিউটারের প্রজন্ম কি? কম্পিউটারের প্রজন্ম কয়টি ও কি কি?
কম্পিউটারের প্রজন্ম কি? কম্পিউটারের প্রজন্ম কয়টি ও কি কি?
কম্পিউটারের প্রজন্ম বা জেনারেশন কি?
কম্পিউটার যন্ত্রটি ক্রমঃবিবর্তন ও বিকাশ লাভের বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থায় এসেছে। কম্পিউটার যন্ত্রের এই বিবর্তন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং বিকাশের এক একটি ধাপ বা পর্যায়কে কম্পিউটারের প্রজন্ম বা জেনারেশন বলা হয়। কম্পিউটারের প্রজন্ম নিয়ে কিছুটা মতভেদ থাকলেও কম্পিউটারের যান্ত্রিক পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও উন্নয়নের ভিত্তিতে কম্পিউটারের প্রজন্ম কে ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়। নিম্নে কম্পিউটার কম্পিউটারের প্রজন্ম সমূহ পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হল।
কম্পিউটারের প্রজন্ম সমূহঃ
প্রথম প্রজন্ম (১৯৪০-১৯৫৬):
১৯৪০ থেকে ১৯৫৫ সালের মধ্যে যে সব কম্পিউটার তৈরি হয়েছে, সেগুলিকে বলা হয় প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার। ঐ সব কম্পিউটারের গঠনতান্ত্রিক কাঠামোর মূল যন্ত্রাংশ ছিল ভ্যাকুয়াম টিউব।
প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারঃ এ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য কম্পিউটার হচ্ছে এবিসি (ABC), ইউনিভিক (UNIVAC) ও এনিয়াক (ENIAC) এর ওজন ছিল ৩০ টন। এতে ১৮০০ শত ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহৃত হয়। এটা চালাতে বিদ্যুৎ খরচ হত ২০০ কিলোওয়াট। ১৯৪৮ সালে ট্রানজিস্টর আবিষ্কার হয়।
দ্বিতীয় প্রজন্ম (১৯৫৬-১৯৬৩):
দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর এর ব্যবহার শুরু হয়। এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলির যন্ত্রাংশ ছিল আকারে তুলনামূলক ভাবে ছোট।
দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারঃ এ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য কম্পিউটার হচ্ছে আইবিএম-১৪০০, আইবিএম-৭০৯০, আরসিএল-৩০১ ও ৫০১ এবং আরসিএল-৩০০ ইত্যাদি।
তৃতীয় প্রজন্ম (১৯৬৪-১৯৭১):
ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (Integrated circuit) এর উন্নতি তৃতীয় প্রজন্মের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে ট্রানজিস্টরের পরিবর্তে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (আইসি) এর ব্যবহার শুরু হয়। এ প্রজন্মের কম্পিউটারে মনিটর, মেমরি ও প্রিন্টারের প্রচলন শুরু হয়।
তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারঃ এ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য কম্পিউটার হচ্ছে আইবিএম-৩০০, ৩৭০ এবং জি ই-৬০০ ইত্যাদি। ৩য় প্রজন্মেই বাংলাদেশে কম্পিউটারের আবির্ভাব ঘটে। ১৯৬৪ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের পরমানু শক্তি কেন্দ্রে আইবিএম-১৬২০ নামের কম্পিউটার নিয়ে আসে।
চতুর্থ প্রজন্ম (১৯৭১-বর্তমান):
মাইক্রোপ্রসেসর কম্পিউটারে সংযোজন চতুর্থ প্রজন্মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য । এ প্রজন্মের কম্পিউটারের RAM, ROM, উচ্চ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন Memory, Windows XP, Vista, Linux, Windows-7, Windows-10 ইত্যাদির উদ্ভব ঘটে ব্যাপক হারে। কম্পিউটারের সব সরঞ্জাম সিপিইউ এর মধ্যে সজ্জিত করা হয়ে থাকে । যেহেতু এই প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো আরো ক্ষমতাসম্পন্ন হয়, তাই কম্পিউটারগুলো একটা আরেকটার সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। যেটা আধুনিক ইন্টারনেটের সূচনা করে দেয়। এ প্রজন্মে মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer), সুপার কম্পিউটার (Super Computer) এর ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়।
পঞ্চম প্রজন্ম (আগামী দিনগুলি):
পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর উপর নির্ভর করে, যা এখন পর্যন্ত ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে। এ প্রজন্মের কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, ভয়েস রিকগনিশন (Voice Recognition ) সহ অন্যান্য বিষয় সংযোজিত থাকবে। যদিও বর্তমানে Voice Recognition এর মত অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহৃত হচ্ছে। পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটিং এর লক্ষ হচ্ছে এমন একটা ডিভাইস তৈরি করা যেটা Natural Language এর সাড়া দিতে পারবে।
No comments